স্বামী দ্বিতীয় বিয়ে করে ওই মহিলার কাছে চলে গেছে।

আমি অনেক বিপদে আছি। আমার স্বামী আমাকে রেখে দ্বিতীয় বিয়ে করে ওই মহিলার কাছে চলে গেছে। আমি মানসিকভাবে দিন দিন অসুস্থ হয়ে মৃত্যুর দিকে ধাবিত হচ্ছি। আপনি কি আমাকে এমন কোনো উপায় বলে দেবেন যেটা শোনার পর পৃথিবীতে নতুনভাবে বেঁচে থাকতে পারবো? আপনার পরামর্শে একটি জীবন বেঁচে যাবে।
প্রশ্নটা যেহেতু করতে পেরেছেন, তার মানে আপনি এখনো মারা যান নি। স্বামী দ্বিতীয় বিয়ে করে আপনাকে রেখে চলে গেছে, আপনি কেন এটাকে এখনো সহজভাবে নিতে পারছেন না? আপনি যখন এ পৃথিবীতে এসেছিলেন তখন কি এ স্বামীকে নিয়ে এসেছিলেন? না মৃত্যুর সময় এ স্বামী আপনার সঙ্গে যাবে? তাহলে এত আহাজারি কেন? যে পুরুষ আরেকজন মহিলাকে বিয়ে করে চলে যেতে পারে তার জন্যে কেন আপনি এত মরিয়া হবেন? হাঁ, কষ্ট পেতে পারেন, তার জন্যে ফিল করতে পারেন বা আর্থিকভাবে তার ওপর নির্ভরশীল হয়ে থাকলে এখন সাময়িক অসুবিধাও ভোগ করতে পারেন। কিন্তু স্বামী আরেকটা বিয়ে করে চলে গেছে বলে দিন দিন মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যেতে হবে, এরকম কথা কোনো আত্মসম্মানবোধসম্পন্ন মহিলার বলা উচিত নয়। যে স্বামী আরেক নারীর হাত ধরে স্ত্রীকে ফেলে চলে যায় তার জন্যে কোনো আক্ষেপ করা উচিত নয়।

কোনো স্বামীরও উচিত নয়-তাকে ফেলে চলে যাওয়া স্ত্রীর কথা মনে করে কষ্ট পাওয়া। কারণ স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কটা আসলে দুপক্ষীয়। শুধু একপক্ষের আগ্রহে এ সম্পর্ক টেকে না। আর টিকলেও সেটা কখনো সুস্থ দাম্পত্যজীবন হয় না। যত রাখতে চাইবেন, তত সে বিরক্ত হবে।

এখন আপনি যা করতে পারেন তাহলো যোগ্যতা অর্জন করে আত্মপরিচয়ে পরিচিত হওয়া। আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হওয়া এবং সৎকর্মে সময় কাটানো। আর যদি প্রয়োজন মনে করেন, জীবনসঙ্গী হিসেবে উপযুক্ত কাউকে পান, তাহলে দ্বিতীয় বিয়ে করতে পারেন। তবে যদি সন্তান থাকে তাহলে যা-ই করবেন, সন্তানের সার্বিক কল্যাণের বিষয়টি মাথায় রাখবেন।

রোজা ধর্মীয় এবং আত্মিক উন্নয়নের পাশাপাশি স্বাস্থ্যরক্ষায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে

আমি খুবই ভগ্ন স্বাস্থ্যের একজন মানুষ। একসময় ধারণা ছিলো রোজা রাখলে আমার শরীর আরো খারাপ করবে। দীর্ঘদিন সে কারণে রোজা রাখিও নি। কিন্তু এখন আত্মিকভাবেই রোজা রাখার প্রয়োজন অনুভব করছি। সেইসাথে পেপারে প্রায়ই দেখি রোজা রাখলে নাকি শরীরের জন্যেও উপকার। ব্যাপারটা একটু বুঝিয়ে বলুন।

আপনি ঠিকই শুনেছেন। রোজা ধর্মীয় এবং আত্মিক উন্নয়নের পাশাপাশি স্বাস্থ্যরক্ষায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

গবেষণায় দেখা গেছে, যখন কোন ব্যক্তি স্বাভাবিক খাদ্য তালিকা অনুসরণ করে রোজা রাখে, তখন শরীর থেকে বিষাক্ত ও চর্বি জাতীয় পদার্থের অপসারণ ঘটে এবং একই সাথে প্রাকৃতিক ফলমূল গ্রহণ করার ফলে তা শরীরের ভিটামিন ও মিনারেলের চাহিদা পূরণ হয় যা শরীরের রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে।
মধ্যপ্রাচের একদল কার্ডিওলজিস্ট বলেছেন যে যারা রমজানে রোজা রাখেন তাদের রক্তে কোলেস্টেরল এর পরিমাণ কমে যায়। ফলে নানা ধরণের হৃদরোগ যেমন হার্ট আটাক, স্ট্রোক ইত্যাদির ঝুঁকিও কমে যায়। আর যদি রমজানের পরেও সুষম এই খাদ্যাভ্যাস চালু রাখা যায়, তবে কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়ার কোনো সম্ভাবনাই থাকবে না। সেই সাথে দেহের ওজন নিয়ন্ত্রণ করাটাও সহজ হয়।

পাউরুটি-বিস্কুট, কেক বা পিজা-র মতো খাবার খাওয়ার পর দেহের ভেতর এগুলো টক্সিনে রূপান্তরিত হয়। এমনকি কোনো কোনো সময় তা এডভান্সড গ্লাইসেশন এন্ড প্রোডাক্ট (Advanced Glycation End product বা AGE) এ রূপান্তরিত হয়। আমরা জানি বয়স এবং ডায়াবেটিসের কারণে মানুষের যে দুরারোগ্য ব্যাধিগুলো হয়, যেমন, অ্যাজমা, আথ্রারাইটিস, হার্ট অ্যাটাক, কিডনি ফেইলিওর, দৃষ্টিশক্তি হারানো, দাঁত পড়ে যাওয়া, মস্তিষ্কের ক্ষমতা কমে যাওয়া – ইত্যাদির পেছনে মূল কারক হলো এই AGE। রোজাতে দীর্ঘ সময় না খেয়ে থাকার ফলে এই ফ্যাট কমে এবং ক্ষতিকারক টক্সিনগুলো লিভার, কিডনি ও অন্যান্য অঙ্গের মধ্য দিয়ে রেচনের মাধ্যমে বেরিয়ে যায়।

রোজা রাখলে পরিপাকতন্ত্রের বিশ্রাম হয়। দেহের যে অঙ্গপ্রত্যঙ্গগুলো খাবার হজমের কাজ করে, রোজার সময় তারা একটা বিরতি পায়। হজমের রস নিঃসরণটা তখন ধীর হয়। খাবারগুলোও ভাঙে ধীরে। দেহে তরলের ভারসাম্য বজায় রাখতে এটা খুব সহায়ক। দেহের জন্যে প্রয়োজনীয় শক্তিও তখন নিঃসরণ হয় ধীরে।

অবশ্য রোজা রাখলেও পাকস্থলীর এসিড নিঃসরণ বন্ধ হয় না। এজন্যেই পেপটিক আলসারের রোগীদের রোজা রাখার ক্ষেত্রে ডাক্তাররা কিছুটা সতর্কতা অবলম্বন করতে বলেন।

বলা হয়, ওষুধ ছাড়া রক্তচাপ কমাবার এক আদর্শ পদ্ধতি রোজা। কারণ রোজা রাখলে প্রথমে গ্লুকোজ, পরে চর্বিকণাগুলো ক্ষয় হয়ে শক্তি উৎপাদন করে। রোজা রাখলে মেটাবলিক রেটও কমে। এড্রিনালিন এবং নরএড্রিনালিনের মতো স্ট্রেস হরমোন উৎপাদন কমে। আর এতে করে মেটাবলিক হার একটা স্বাভাবিক মাত্রায় থাকে। ফলে ব্লাড প্রেশার কমে। আর এর ইতিবাচক প্রভাব পড়ে এথেরেসক্লেরোসিস বা ধমনীতে চর্বি জমার প্রক্রিয়ার ওপর যা হার্ট এটাকের ঝুঁকি কমায়।

রোজা রাখাকালীন একজন মানুষের দেহের গ্লুকোজগুলো দ্রুত ভাঙতে থাকে এবং দেহের জন্যে প্রয়োজনীয় শক্তি উৎপাদন করে। ফলে তখন ইনসুলিনের উৎপাদন কমে যায় যা প্যানক্রিয়াসকে কিছুটা বিশ্রাম দেয়। অন্যদিকে গ্লুকোজ ভাঙার সুবিধার্থে গ্লাইকোজেন তৈরি হয় আর এ সবকিছুর সম্মিলিত ফলাফল হলো দেহে ব্লাড সুগারের পরিমাণ কমানো যা ডায়াবেটিস প্রতিরোধে সহায়ক।

জীবাণু বা আঘাতজনিত কারণে দেহ যে প্রক্রিয়ায় অসুস্থ হয়, গবেষণায় দেখা গেছে রোজা সে প্রক্রিয়াকে নষ্ট করে দেয়। ফলে রিউমাটয়েড আর্থ্রারাইটিস, এলার্জি, সোরিয়াসিস নামক চর্মরোগ ইত্যাদি থেকে নিরাময়ে রোজার ভূমিকা আছে বলে মনে করেন চিকিৎসাবিজ্ঞানীরা। কোনো কোনো বিশেষজ্ঞের মতে, পিত্তথলির রোগ আলসারেটিভ কোলাইটিস নিরাময়েও রোজার ভূমিকা আছে।

অনেকেরই অনেক ধরনের খারাপ অভ্যাসের প্রতি আসক্তি থাকে, যেমন-ধুমপান করা, অতিরিক্ত চিনি জাতীয় খাবার খাওয়া ইত্যাদি। রমজানে সারাদিন খাওয়া-দাওয়া থেকে বিরত থাকায় অনেক ধরণের বাজে অভ্যাস থেকে দূরে সরে আসা সহজ হয়। একটানা কয়েকদিন বিরত থাকলে স্বতঃস্ফূর্তভাবেই সেই অভ্যাসটা ত্যাগ করা যাবে। সবচেয়ে ভালো হয় যদি এ কাজটা সংঘবদ্ধভাবে করা যায়। যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিস রমজান মাসটাকে ধুমপান ছেড়ে দেবার জন্য আদর্শ সময় বলে আখ্যায়িত করেছে।

আমেরিকার একদল বিজ্ঞানী গবেষণা করে দেখেছেন যে রমজানে রোজা রাখার মাধ্যমে মস্তিষ্কে নতুন নতুন কোষের জন্ম হয়। ফলে মস্তিষ্কের কর্মদক্ষতা বেড়ে যায়। অন্যদিকে কর্টিসল নামক একধরণের হরমোন যা আড্রিনালিন গ্রন্থি থেকে নিঃসরিত হয়, তার পরিমাণ কমে যায়। ফলশ্রুতিতে পুরো রমজান মাসে এবং রমজানের পরেও মানসিক চাপ বেশ কম থাকে।

আমার স্বামী ঠিকমতো আসে না।

আমার অসুখের জন্যে কোয়ান্টাম করেছি। স্বামীর সাথে ভালো সম্পর্ক থাকার জন্যে কোয়ান্টাম করেছি। একটাও সমাধান হয় নি। গুরুজী আমি এখন কী করবো? আমার চোখে সমস্যা। ঠোঁটে ও জিহবায় সমস্যা। দাঁতে সমস্যা, পেটে ব্যথা ও গ্যাস হয়। মেরুদন্ডে শেষ অংশে ব্যথা ও হাঁটুতে ব্যথা। আমার স্বামী ঠিকমতো আসে না। ঠিকমতো টাকাপয়সা দিতে চাচ্ছে না। আমার কোনো সমস্যা হলে ওর সমস্যা মনে করে না। আমি আমার স্বামীকে কাছে পেতে চাচ্ছি। গুরুজী আমার দাম্পত্য জীবন অনেক কষ্টের হচ্ছে। গুরুজী আমার শারীরিক মানসিক সুস্থতা চাচ্ছি। আমার স্বামী যেন আমার সবসময় খোঁজ নেয় এবং ঠিক সময় আসে এই দোয়া করবেন। ওর মনটা অনেক শক্ত। আপনি আপনার চোখে দেখবেন না।

আপনি আসলে টেনশন বেশি করছেন। এই অসুস্থতাগুলো টেনশনেরই ফসল। আবার এই অসুস্থতার কথা সারাণ বলার কারণেই হয়তো আপনার স্বামীকেও আপনি পাচ্ছেন না। কারণ নির্মম হলেও একটি বাস্তব সত্য হচ্ছে অসুস্থ একজন মানুষ কিন্তু বোঝা। নিজের জন্যে বোঝা, স্বামীর জন্যে বোঝা, পরিবারের জন্যে বোঝা। খুব প্রিয়মানুষটিও যখন অসুস্থ হয়, তখন প্রথম কিছুদিন মমতা থাকে, সহানুভূতি থাকে। কিন্তু অসুখ যখন দীর্ঘায়িত হয়, তখন বলে না যে নিত্য মরাকে কেউ দেখতে আসে না। বেশিক্ষণ তার জন্যে সমবেদনা পোষণ করা যায় না। এটার ব্যতিক্রম হয়তো আছে, কিন্তু ব্যতিক্রম ব্যতিক্রমই।

ধরেন, এই যে আপনি এতরকম ব্যথার কথা বলছেন, নিশ্চয়ই আপনার স্বামী যখন আসে তাকেও আপনি সারাক্ষণই ব্যাথার কথা বলেন, তার সামনে কোকাতে থাকেন। দুয়েকজন ছাড়া খুব কম স্বামীই আছেন যারা দিনের পর দিন এরকম অসুস্থ স্ত্রীর প্রতি ভালবাসা বোধ করবে।

তাহলে আপনাকে কী করতে হবে? সুস্থ হতে হবে। এই যে ব্যথাগুলোর কথা বললেন। এগুলো আসলে আপনার মনের অস্থিরতারই প্রকাশ। আপনাকে কী করতে হবে? নিয়মিত মেডিটেশন করবেন। মেডিটেশন মানে হচ্ছে বসে কতক্ষণ সিডি শোনা না। নিজেকে শিথিল করা, রিলাক্স করা। আপনি কোর্স রিপিট করবেন। দুইবার, তিনবার, চারবার কোর্স রিপিট করেন। কেন? আসলে এই যে মনের জটটা আপনার এখনো খোলে নাই। এই মনের জটটাকে খুলতে হবে। শিকড় থেকে তুলে ফেলতে হবে।

বোখারি শরীফের একটি হাদিস হচ্ছে, রসুলুল্লাহ (স) বলেছেন, তোমাদের দেহে হৃৎপিন্ডের কাছে এমন একটা অংশ (ক্বালব বা মন বা হৃদয়) আছে সেটা ভালো থাকলে দেহ ভালো থাকে আর তা যখন খারাপ হয় সারা দেহ খারাপ হয়ে যায়। মানে মনে যখন জট পাকিয়ে যায়, মন যখন কলুষিত হয়ে যায় তখনি এই রোগব্যধি, ব্যথাবেদনা সৃষ্টি হয়। যে কারণে ২০ বছর আগে আমরা বলেছিলাম যে ৭৫ ভাগ রোগের কারণ হচ্ছে মানসিক, মনোদৈহিক। মনের জট খুলে ফেলেন ভালো হয়ে যাবেন। তো এই মনের জটটাকে খুলতে হবে।

আপনার ভালো না হওয়ার, আপনি যতগুলো সমস্যা বললেন এগুলো সব হচ্ছে মনোদৈহিক। এই জটটা যখনই খুলে যাবে। আপনি সুস্থ ফিল করবেন। যখন শারীরিকভাবে সুস্থ ফিল করবেন। তখন মানসিকভাবে আপনি নিজে বুঝবেন যে হাজবেন্ডের মনোযোগ আকর্ষণ করার জন্যে আমাকে কী কী করতে হবে? মন পাওয়ার জন্যে কী করতে হবে? নিজে বুঝবেন, কাউকে বলে দিতে হবে না। যদি আপনি শারীরিকভাবে, মানসিকভাবে সুস্থ থাকেন।

আপনি আগামী ৬০ দিন একবেলা শিথিলায়ন, একবেলা সুখী জীবনের মেডিটেশন করবেন। আর দিনে ২ হাজার বার সুস্থ দেহ, প্রশান্ত মন, কর্মব্যস্ত সুখীজীবন অটোসাজেশনটি দেবেন। যখনই মনে পড়ে তখনই বলবেন, এটা। অনুভব করতে থাকবেন যে আপনি সুস্থ, আপনি সুস্থ। তারপর আমাকে জানাবেন।

 

|| স্ত্রীর সাথে কদাচিৎ মনমালিন্য হয় ||

আমাদের দাম্পত্যজীবন ১৩ বছর। আমার স্ত্রীর সাথে কদাচিৎ মনমালিন্য হয়। ঝগড়াঝাটি নয়। সে খুব চুপচাপ, খুব বেশি আত্মকেন্দ্রিক। অনেকটা এ কারণেই কোর্স করিয়েছি। কিন্তু তার মধ্যে কোনো পরিবর্তন আসে নি। একদিনের জন্যেও মেডিটেশন করে নি। অবশ্য পাবলিকেশনগুলো পড়ে এবং কোয়ান্টামকে পছন্দ করে। কিন্তু ইনভলব হতে চায় না। আর একটি বিষয় তিনি প্রায়ই আমাকে বোঝাতে চান তিনি যেমন করে আমাকে ভালবাসেন তেমন করে কারো স্ত্রী তার স্বামীকে ভালবাসে না। অথচ আমার অবজারবেশন হচ্ছে যদি তাই হয় তবে আমার যৌক্তিক পছন্দগুলো অপছন্দগুলো বুঝে তার চলা উচিত। অথচ তার বেলায় তা দেখি না। তাহলে কী বুঝবো? তাছাড়া আমি তার উপর রাগ করে দু-একদিন চুপচাপ থাকলে সে কয়েকদিনের জন্যে ঠিক হয়। আবার আমি স্বাভাবিক হলে সে আগের মতো হয়ে যায়। এক্ষেত্রে রেগে গেলেন তো হেরে গেলেন সূত্রটি কাজ করে না। বরং উল্টোটি কাজ করে কেন?

 

আপনার স্ত্রী কোয়ান্টামকে পছন্দ করে, কোয়ান্টামের প্রকাশনাগুলো করে, আপাতত এটাই বা কম কি। আপনি তাকে এসব ব্যাপারে কোনো জোর করবেন না। আর ওনার এই চুপচাপ থাকা, নিজের মতো থাকা- এটাকে ওনার ব্যক্তিত্ব বলে মেনে নিন। কারণ কেউ কেউ এরকম হতেই পারে। আর আসলে মানুষের মধ্যে এই বৈচিত্র থাকবেই। সেজন্যেই আমরা মানুষ। তা নইলে তো সব রোবট হয়ে যেতো। আর বাগানে শত ধরনের ফুল থাকে বলেই কিন্তু বাগান এত সৌন্দর্যময়।

যেমন ফেরেশতা এক ধরনের রোবট। তাদের নিজেদের কিছু করার নেই। চিন্তা নাই ভাবনা নাই। ইয়েস বস। আল্লাহ তায়ালা যা বলছেন তারা তাই করছে। আল্লাহ কিন্তু তাদের পরে মানুষ সৃষ্টি করেছেন, কেন? এই বৈচিত্রের জন্যে।

তো এখন স্ত্রী তার মতো। আর তিনি যথার্থই বলেছেন, তিনি যেমন করে আপনাকে ভালবাসেন এইরকম করে পৃথিবীর আর কেউ বাসবে না। কারণ তার মতো করে পৃথিবীতে আল্লাহ তায়ালা দ্বিতীয় কাউকে বানায় নি। অতএব তার মতো করে তো আর কেউ ভালবাসতে পারবে না। হয় তার চেয়ে বেশি ভালবাসবে। না হয় তার চেয়ে কম ভালবাসবে। তার মতো তো বাসতে পারবে না। অতএব এক স্ত্রীর সাথে তো আরেক স্ত্রীর ভালবাসার পার্থক্য হবেই।

আর আপনার অবজারবেশন যেটা যে আপনার যৌক্তিক পছন্দগুলো অপছন্দগুলো বুঝে তার চলা উচিত। অথচ তার বেলায় তা দেখি না। আসলে এই ব্যাপারে তিনি হয়তো উদাসীন। এটা হতে পারে, অনেকে অনেক ব্যাপারে কেলাস থাকতে পারে। মানে ঠিক সিরিয়াস না। কিন্তু আপনি কী করছেন? আপনি রাগ করছেন, তখন আপনার স্ত্রী কিছুসময়ের জন্যে একটু সিরিয়াস হচ্ছেন। কিন্তু কিছুদিন পর আবার তার আগের অবস্থায় ফিরে যাচ্ছে। তার মানে এটা কিন্তু মন থেকে করা নয়। আপনাকে খুশি করার জন্যে, দেখানোর জন্যে করা। কারণ আপনার স্ত্রীর কোনো উপার্জন নাই, তিনি আপনার আয়ের ওপর নির্ভরশীল, অতএব আপনাকে রেগে যেতে দেখলে তিনি একটু সন্ত্রস্ত বোধ করবেন এটা তো স্বাভাবিক। কিন্তু ভালবাসা থেকে করা নয়। তাহলে এর মধ্যে তো কোনো আনন্দ নাই।

আপনার রাগ ছাড়া যেদিন আপনার স্ত্রী আপনার পছন্দ অপছন্দগুলোকে গুরুত্ব দিবেন, সেদিন বুঝবেন যে আপনি জিতেছেন। এর আগ পর্যন্ত আপনি হেরে গেছেন।

যেরকম একজন কর্মচারীকে আপনি আদেশ করলেন। কর্মচারী কী করে? ইচ্ছায় হোক অনিচ্ছায় হোক ইয়েস বস। ইয়েস বস। ইয়েস বস। আবার যখন রাগ করছেন সে খুব কাজ করছে। কারণ চাকরি যাওয়ার ভয়ে। আপনাকে ভালবেসে নয়। তো অতএব ভালবাসাটা আলাদা জিনিস। ভালবাসা এমন জিনিস সেটা কোনো কিছু চায় না। ভালবাসা শুধু দিতেই চায়। আপনি যদি আপনার স্ত্রীকে ভালবাসেন আপনি কখনো তার কাছ থেকে কিছু প্রত্যাশা করবেন না। আপনি দিয়েই যাবেন। স্ত্রী দিলো কী না দিলো এটা তার ব্যাপার। ভালবাসা হচ্ছে এরকম জিনিস। আপনি ভালবাসেন প্রত্যাশা ছাড়া। আপনি দেখবেন যে আপনি আপনার স্ত্রীকে প্রভাবিত করতে পেরেছেন। আপনার স্ত্রী যখন দেখবে যে, আপনি তার পছন্দকে গুরুত্ব দিচ্ছেন। তখন সেও আপনার পছন্দকে গুরুত্ব দেওয়া শুরু করবে। আর কী করবেন? কমান্ড সেন্টারে নিয়ে আসবেন। স্ত্রীকে বোঝাবেন। মানে বিটা লেভেলে বুঝিয়ে কোনো লাভ নাই। কারণ বিটা লেভেলে তিনি শুনবেন না। কমান্ড সেন্টারে নিয়ে আসেন। তাকে কত ভালবাসেন এটা বোঝান। তারপরে বোঝান যে আসলে এই যুক্তিসঙ্গত কাজগুলো যদি তুমি করতে, এই আচরণ যদি তুমি করতে আমার খুব ভালো লাগতো। দেখতে থাকেন যে তিনি করছেন। সেভাবে করছেন। তাহলে মনের জগত থেকে তার মধ্যে পরিবর্তন আসবে এবং আপনি তাকে বোঝাতে পারবেন।

আমার স্বামী আমার সাথে কথা বলছে না।

আজ প্রায় ছয়-সাত মাসের বেশি আমার স্বামী আমার সাথে কথা বলছে না। আমি মাফ চাচ্ছি। কমান্ড সেন্টারে বোঝাচ্ছি। হিলিংয়ে নাম দিচ্ছি, কোনোভাবেই তাকে স্বাভাবিক করতে পারছি না।

এটা তো উল্টা। সাধারণত স্ত্রীরা কথা বলে না। স্ত্রীদের মান ভাঙাতে হয়। আপনি তো উল্টোটা করছেন। স্বামীর মান ভাঙাচ্ছেন। ভাঙান, ভাঙাতে থাকেন। আজকে ভাঙছে না, ছয় সাত মাস হয়েছে তাতে কী? স্বামী তো আর ছয় সাত মাসের না। স্বামী তো সারা জীবনের। অতএব টেকটাইম। যেহেতু আপনার সাথেই আছে। খাওয়া দাওয়া সবকিছু করছে, শুধু কথা বলছে না। না বলুক, আপনি আপনার কর্তব্য করে যান। আপনিও কী করবেন? এখন থেকে কথা বলবেন না। সবকাজ করবেন, কিন্তু আপনিও কোনো কথা বলবেন না। খাবার দিচ্ছেন, এটা করছেন, সেটা দিচ্ছেন, কিন্তু কথা বলবেন না। যা কিছু করেন আকার ইঙ্গিতে করবেন।

আপনি বলবেন যে, যদি শেষ পর্যন্ত জিজ্ঞেস করে যে তুমি এরকম করছো কেন? বলবেন যে না আমি ভাবছি যে আমি এক বোবার সংসার করছি। তো আমিও বোবা হয়ে গেছি। তো এখন তুমি যখন কথা বললে, তাই আমি কথা বলছি। আমার বোবাত্ব ঘুছে গেছে। কারণ আমি জানি যে স্বামী যা করে সেটারি অনুকরণ করতে হয় স্ত্রীকে। তুমি যখন বোবা, আমিও তখন বোবা, দুই বোবার সংসার। এমনকি অন্য কেউ এলেও আমরা কথা বলবো না। অর্থাৎ বিষয়টাকে এত সিরিয়াসলি দেখার কিছু নেই।

আর কমান্ডসেন্টারে এনে তাকে খুব ভালো করে বোঝান। যে আসলে ভুলতো মানুষেরই হয়। আমারও ভুল হয়েছে। তুমি তো আমাকে প্রচুর শাস্তি দিয়ে ফেলেছো। আমার যা শাস্তি পাওয়ার তা আমি পেয়ে গেছি। আর তাকে মনে করিয়ে দিন আপনাদের আনন্দের স্মৃতিগুলোকে।

আমরা আসলে যখন কারো সাথে সমস্যা হয় তখন কী করি? যেরকম ধরেন হয়তো স্বামী স্ত্রীর সাথে কোনকিছু ঝগড়া হয়েছে। মতবিরোধ হয়েছে। সাথে সাথে এর আগে স্বামী কতবার কতরকম খারাপ কথা বলেছে সব মনে পড়ে। স্ত্রী কতবার খারাপ কথা বলেছে সব লাইন ধরে একদম এক্সপ্রেস ট্রেনের মতো মনে পড়ে। ফ্লাস ব্যাকে। যেকোনো সমস্যা হলে সব ভালো জিনিসগুলো কল্পনা করবেন। ভালো মুহুর্তগুলোকে কল্পনা করবেন। যত ভালো সময়গুলোকে কল্পনা করবেন দেখবেন যে দ্রুত আপনি সমস্যার সমাধান পেয়ে গেছেন।

সুখী হওয়ার জন্যে স্ত্রীকে কীভাবে বিশ্বাস করা উচিত ?

অনেকে বলেন মেয়েদেরকে নাকি কখনো বিশ্বাস করতে নেই। তাহলে সুখী পরিবার কীভাবে নির্মিত হবে? জীবনের সবদিক দিয়ে সুখী হওয়ার জন্যে স্ত্রীকে কীভাবে বিশ্বাস করা উচিত। ব্যাখ্যা করলে উপকৃত হবো।

সবসময় মনে রাখবেন যে বিশ্বাসী তাকে অবশ্যই বিশ্বাস করতে হবে। তিনি পুরুষ হন অথবা নারী। বিশ্বাস করার আগে চিন্তা ভাবনা করবেন, একটু খোঁজ খবর নেবেন। একটু পর্যবেক্ষণ করবেন। কিন্তু যখন আপনি কাউকে স্ত্রী হিসেবে গ্রহণ করলেন পরিপূর্ণ বিশ্বাস ছাড়া আপনার কোনো বিকল্প নেই। পরিপূর্ণরূপে বিশ্বাস করতে হবে। যা কিছু সংশয়, স্ত্রী হওয়ার আগ পর্যন্ত। খোঁজখবর যা কিছু নেওয়ার স্ত্রী হওয়ার আগে। স্ত্রী হওয়ার পরে খোঁজ খবর নিয়ে আর কোনো লাভ নেই। কারণ বিয়ের পর এই বিশ্বাসটাই হচ্ছে সকল সম্পর্কের মূল। কিন্তু বিশ্বাস করার আগে সবসময় খোঁজ খবর যাচাই বাছাই করে নেবেন।

সংকটের মুহূর্তেও বলি ভালো আছি…

আমি সেই ব্যক্তি যে গত প্রজ্ঞা জালালিতে প্রশ্ন করেছিলাম। কমান্ড সেন্টারে ওয়াইফকে বোঝাতে গেলে তার দেয়া কষ্টগুলো উকি দেয়। লেভেল ভালো হয় না। লামা কোয়ান্টায়নের পর আমার এই সংকট কেটে গেছে। কিন্তু অপর পক্ষের লোকজন যখন ফোন করে জিজ্ঞেস করে কেমন আছি, বলি শোকর আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি। উনারা কমেন্ট করেন আমি অন্য মেয়েদের নিয়ে ভাবি তাই সংকটের মুহূর্তেও বলি ভালো আছি। যেই মেয়েদের নিয়ে সন্দেহ করে আমার ওয়াইফ সম্পর্ক ব্রেকআপের পর্যায়ে নিয়ে আসছে। আমি এর কি উত্তর দেবো?

উত্তর খুব সিম্পল যে শোকর আলহামদুলিল্লাহ আমি ভালো আছি। যা সন্দেহ করে করুক। আপনি শুধু একটা কথাই বলবেন যে শোকর আলহামদুলিল্লাহ আমি ভালো আছি। এবং আমার সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। কারণ আমি আল্লাহয় বিশ্বাস করি এবং তিনি যেকোনো সমস্যার সমাধান করে দিতে পারেন। আমি আমার ধ্যানের মাধ্যমে মেডিটেশনের মাধ্যমে আল্লাহর কাছে সেটাই প্রার্থনা করছি এবং যেহেতু প্রার্থনা করছি এই জন্যে আমি ভালো আছি।

আবার বলবেন যে শোকর আলহামদুলিল্লাহ আমি ভালো আছি। যত বলবেন তত আপনি ভালো থাকবেন। কে কি মনে করলো না করলো কে কি মনে করে কি সিদ্ধান্ত নিলো না নিলো এটা পুরোপুরি অবান্তর। আপনি তাই করবেন যা আপনি উপলব্ধি করবেন। যেটা আপনার জন্যে এবং অন্যের জন্যে কল্যাণকর সেটাই আপনি করবেন।

স্ত্রীর সাথে ভুল বোঝাবুঝি…

স্ত্রীর সাথে ভুল বোঝাবুঝির কারণে সম্পর্ক নাজুক এবং প্রায় ব্রেকের কাছাকাছি। হিলিং বা কমান্ড সেন্টার করার সময় তার দেয়া আঘাত আর কষ্টগুলো বারবার উঠে আসে। ভালোভাবে মেডিটেশন হয় না। রাগ ক্ষোভ সৃষ্টি হয়। কি করবো?

আসলে আপনি নিজেই মনে করছেন যে, স্ত্রীর সাথে ভুল বোঝাবুঝির কারণে সম্পর্ক নাজুক। তো সম্পর্কটা যদি ভুল বোঝাবুঝির কারণে হয় এবং ভুল বোঝাবুঝির যদি কোনো বাস্তব ভিত্তি না থাকে তাহলে এই ভুল বোঝাবুঝি দুর করার দায়িত্ব স্বামী হিসেবে আপনার। কারণ একজন স্বামীর যে সুবিধা রয়েছে পারিবারিক সম্পর্কে একজন স্ত্রীর সে সুবিধা নেই। এই ভুল বোঝাবুঝি আপনাকেই দূর করতে হবে।

এটা কিন্তু খুব মজার যে যখনই সম্পর্ক সুন্দর করার জন্যে কমান্ড সেন্টারে আনেন তখন দেখা যায় যে আঘাত আর কষ্টগুলো বার বার উঠে আসে। শুধু আঘাত এবং কষ্টগুলোই কিন্তু আসে। আমাদের পারস্পরিক সম্পর্কে অসুবিধাটা কোথায় হয়? যখন কারো সাথে ঝগড়া হয় তখন তার কথা চিন্তা হওয়ার সাথে সাথেই তার সাথে আমরা তর্ক শুরু করে দিই মনে মনে। এই তুমি আমাকে বুঝলে না, তুমি এই করেছ তুমি সেই করেছ। সারা জীবনের যত খারাপ ইতিহাস সব একেবারে ফ্লাশ ব্যাকের মতো সিনেমার মতো আসতে থাকে।

এক্ষেত্রে চ্যানেলটাকে বদলে দিতে হবে। আপনি যেহেতু মনে করছেন যে আপনার স্ত্রীর সাথে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে এবং বোঝা যাচ্ছে যে আপনি বিয়েটাকে টিকিয়ে রাখতে চান। তার মানে আপনার স্ত্রীর সাথে আপনার সুখের স্মৃতিও আছে। যদি সুখের কোনো স্মৃতি না থাকতো তাহলে আপনি এই ভুল বোঝাবুঝি দূর করার ব্যাপারে কোনো চিন্তাই করতেন না।

এরপরে যখন মেডিটেশনে বসবেন সেই সুখের স্মৃতিগুলো নিয়ে আসবেন। স্ত্রীর সাথে আপনার সুখের যে স্মৃতিগুলো ছিলো সেই স্মৃতিগুলো নিয়ে আসবেন। তারপরে দেখবেন যে এই স্মৃতিগুলো আপনার হৃদয়ে আনন্দের প্লাবন সৃষ্টি করছে, শান্তির প্লাবন সৃষ্টি করছে এবং বন্যার পানির মতো আবর্জনাকে ভাসিয়ে নিয়ে যায় সেভাবে এই প্লাবন সব ভুল বোঝাবুঝিগুলোকেও ভাসিয়ে নিয়ে চলে যাচ্ছে। আগামী ৪০ দিন আপনি এটা নিয়মিত করেন। দিনে দুই বার এই মেডিটেশনে আপনার সুখের স্মৃতিগুলো সমস্ত ভুল বুঝাবুঝিগুলোকে ভাসিয়ে নিয়ে চলে যাবে। ইনশাল্লাহ আপনাদের সম্পর্কে ইতিবাচক পরিবর্তন ঘটবে।

আমার স্বামী মনে করে আমি তাকে সবসময় অপছন্দ করি…

আমার স্বামী মনে করে আমি তাকে সবসময় অপছন্দ করি। আমি মনে করি সে আমাকে সবসময় কষ্ট দেয়। এই নিয়ে ভীষণ অশান্তি, এখন আমার করণীয় কী?

আসলে পুরো বিষয়টি এক ধরনের নেতিবাচকতা থেকে হচ্ছে। একদিকে আপনি মনে করেন যে, আপনার স্বামী আপনাকে কষ্ট দিচ্ছে। অন্যদিকে তিনি মনে করেন যে, আপনি তাকে অপছন্দ করেন। দুজনেরই এই নেতিবাচকতার ফলে বাস্তবেও সমস্যাগুলো হচ্ছে। যেমন, আপনার স্বামী মনে করেন আপনি তাকে অপছন্দ করেন। কিন্তু এটা কি তিনি কখনো আপনাকে বলেছেন? এই মনে করাটা তো আপনার ধারণাও হতে পারে। আর শান্তি এবং অশান্তি বিষয়টা তো নিজের মধ্যে। আপনি এখন থেকে ভাবতে শুরু করুন যে আপনার স্বামী আপনাকে পছন্দ করে। আর পছন্দ করলে যে যে আচরণ তিনি করতেন সে আচরণগুলোকেই কল্পনা করুন, মনছবি দেখুন। একটা সময়ে দেখবেন বাস্তবেও তাই ঘটছে। বাস্তবেও তিনি সেই আচরণ করছেন যা থেকে আপনি নিশ্চিত হবেন যে, তিনি আপনাকে ভালবাসেন।

তোমার কারণেই আমার সব অশান্তি ?

বিয়ের দশ বছর পার হলো। শুরু থেকে আমার স্ত্রী ভীষণ অশান্তিতে ভুগছে। জিজ্ঞেস করলেই বলে তোমার কারণেই আমার সব অশান্তি। কিন্তু আমি চেষ্টা করেছি সকল কারণ দূর করতে, তাকে শান্তিতে রাখতে, এরপরও একই অবস্থা। পরিত্রাণের জন্যে কোয়ান্টাম কোর্সও সে করেছে, মাজীর সাথে সাক্ষাৎ করে ডাক্তারও দেখিয়েছি। কিন্তু আমার প্রতি তার ক্ষোভ রাগ। ফলে অশান্তি কমছে না। এখন আমি কী করতে পারি?

আপনি তাকে জিজ্ঞেস করবেন না যে, সে কেমন আছে। সবসময় বলবেন, তুমি ভালো আছো। এমনকি তিনি রাগারাগি করলেও আপনি বলবেন, তুমি তো বেশ ভালো আছো। আসলে কারো কারো বহিঃপ্রকাশটাই এরকম যে, মনে হয় যেন সে খুব বিরক্ত বা ক্ষুব্ধ। আসলে হয়তো তা নয়। কারণ তা না হলে ১০ বছর তিনি সংসার করছেন কীভাবে? আর দাম্পত্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে দেখা যায়, আপাত ঝগড়া-মারামারি হলেও স্বামী-স্ত্রী দুজন দুজনের প্রতি ঠিকই মমতা সহানুভূতি ও ভালবাসার বন্ধনে আবদ্ধ- যা তাদেরকে দাম্পত্য সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে সাহায্য করেছে।